চিত্রলেখা
- শিমুল আহমেদ ২৮-০৪-২০২৪

যেন মনে হয় কতো মহাকাল
শিকল বিদ্ধ তোমার
চরণের কাছে নতজানু,
যেন মনে হয় দণ্ডিত হৃদয়
অাজ খণ্ড খণ্ড হয়ে যায়
নিরবে, অক্লেশে, অনুতাপে।

এতো ব্যবধান অামিতো রচিনি প্রিয়!
কতোটা মুহুর্ত পেরুল বল?
কতবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করল
এতো দীর্ঘ প্রতীক্ষায়!
একদিন তুমি ডাকবেই।
কতবার চন্দ্র গ্রহণ হলো
অাষাঢ় এলো, অমাবস্যার মতো
শোকার্ত হৃদয় বড় কাতর ছিল প্রিয়তমা
তুমি অাসবেই,
কই এলে না তো!

বিয়াত্রিচ কি এসেছিল, অথবা ফেণীব্রাউন,
দেবকী, কাদম্বরী, নার্গিস?
অথচ অজস্র শোকাহত হদয়
জন্ম নিল অগ্নি ও নৈঋিতে।
দান্তে, কীটস, লালন
রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল,
প্রত্যেকটি হৃদয় অাজ একেকটি মহাকাব্য।

তবে তুমিও  কি চিত্রলেখা
অখ্যাত কোন কবির
করুণ কবিতার পদাবলী নিয়ে
নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে
টাইগ্রিস, ইউফ্রেতিস
কোন সভ্যতার মতো।
তবে কি ইতিহাস হবে না
তোমার দীঘল ক্লান্ত
অথবা অবিশ্রান্ত পথচলা,
তোমার ওসব হৃদয়ের
অাছে যা অত সুন্দর
তোমার অধর
দীর্ঘ পথ চাওয়া অপেক্ষমান
তোমার অভিমানী দু'চোখ,
তোমার অস্পৃশ্য চিবুক,
পড়ন্ত বিকেলের মতো লাজুক দৃষ্টি,
মহুয়ার মতো মাতাল
মগজের কোষে অসহ্য সুন্দর
তোমার চুলের গন্ধ,
অাহত, প্রার্থনারত কবি
ব্যাকুল পিয়াসে খুঁজে
সাকীর পিয়ালায় শরাবি তোমায়।
তবে কি ওসবের সব কিছুই
শুধু বিধ্বস্ত হয়ে যাবে
প্রাচীন কোন সভ্যতার মতো!

অামার অক্ষর, শব্দ অার বাক্য
তোমার স্বাক্ষর রেখে যাবে প্রিয়,
তোমাকে রচিব হৃদয়ের গহীন হতে
অন্তরতম সত্যলোকে
হৃদয়ের সবটুকু নীলিমা দিয়ে
তোমাকে করব অামি প্রেমময়।
শব্দগুলো অাসবেই চিত্রলেখা
তোমার অনুপস্থিত অাহত অহমিকার
অনুভবে, ব্যাকুল হবে পথিক কবি,
বেদনার  বুক চিরে শব্দগুলো অাসবেই।

তোমাকে রচিব  অামি
যেমন ভ্রুন থেকে ধীরে ধীরে
অজর কবিতা রচনা করে
সৃষ্টির মতো সত্তা,
অামার প্রত্যেকটি শব্দ
তোমার হৃদয়ে অঙ্কুরিত হবে
ভালবাসার বীজ থেকে
একটি ভ্রুন হয়ে।
তারপর ঝরবে অাকুল মেঘনার বুকে ঝড়ো ঝড়ো থর থর কম্পিত
ভালবাসার জলকণা,
অামি দ্বিধাহীন ব্যাকুল পিয়াসে
কুড়াব তোমার হৃদয় ঝরার বেলা।
যখন রাত্রি রচিবে নিরব অন্ধকার,
তোমার অধরা অধরে
চুমিব প্রিয় গোপনে নির্বিকার।

যেন মহাকাল হেথা দাঁড়ায়ে প্রিয়
শুধাবে তোমারে
সপ্তপারের বেদনা বিহারে
কষ্ট কি লুকােনো ছিল?
অাজও কি বেদনা ভীষণ
লুটপটি খায়?
না-এ ভ্রম মোর শুধু
হৃদয়ের অাঙ্গিনায়!
রোদ্দুর অাজ ছুঁয়না অামাকে
কালো মেঘ যায় ঢেকে,
কে যেন হঠাৎ অামাকে শুধায়
কবি তুমি এলে কোথা থেকে?
কে তোমার তপস্বিনী,
অামি কি তাকে চিনি?
থেকে মৌন অনুক্ষণ
হৃদয় মাঝে একাকী করি বিচরণ,
অতঃপর বলি
তুমি কি জানো না পূজার পাত্র নিয়ে
দেবী'র চরণে পূজা দিতে গেছি
ফিরিয়ে দিল মোরে।
দেবালয়ে অাজ শোকের মাতম
পূজার প্রসাদহীন,
তবুও তাকে পূজিব অামি
অামরণ অমলিন।

শুধালাম কবি যে তোমাকে জানে নাই
তাহাকে তুমি পূজিছ কেবলই বৃথাই।
অামার অামিকে শুধাবার পরে
উত্তর করি তাই
না-এ তপস্যা মোর হবেনা বৃথা
পূজারিণী অভিমানী,
নিরবে তাকে হৃদয় পূজিবে
প্রণয়ে জপিয়া বাণী।

(অসমাপ্ত)

১২/১০/২০১৪ইং
কুমিল্লা পৌর উদ্যান।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।